যশোরেশ্বরী কালী মন্দির বাংলাদেশের একটি বিখ্যাত হিন্দু মন্দির। সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ঈশ্বরীপুর গ্রামে এই শক্তিপীঠটি অবস্থিত। যশোরেশ্বরী নামের অর্থ “যশোরের দেবী”। এটি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য একটি পবিত্র তীর্থস্থান।
গুরুত্বঃ
সত্যযুগে, যখন সতী মাতা যজ্ঞের পর তার দেহ ত্যাগ করেন, তখন মহাদেব সতীর মৃতদেহ কাঁধে তুলে নেন এবং বিশ্বব্যাপী প্রলয় নৃত্য শুরু হয়। এতে ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থানে সতী মাতার দেহের অংশ পতিত হয় এবং এই সমস্ত স্থান শক্তিপীঠ নামে পরিচিতি লাভ করে।
ঐতিহাসিক:
বিশ্বজুড়ে সনাতন ধর্মের ৫১টি পীঠের মধ্যে একটি হল যশোরেশ্বরী কালী মন্দির । দেশ-বিদেশের বহু সনাতন ধর্মের অনুসারীরা প্রতি বছর শ্যামনগরের ঈশ্বরীপুর যশোরেশ্বরী কালী মন্দিরে যান এবং দেবীকে খুশি করার জন্য সেখানে প্রার্থনা করেন। ঐতিহাসিক গুরুত্বের কারণে সনাতন ধর্মাবলম্বী ছাড়াও বহু মানুষ বিভিন্ন সময়ে এই কালী মন্দিরে যান।
মন্দিরটি আনারি নামে এক ব্রাহ্মণ তৈরি করেছিলেন। তিনি এই যশোরেশ্বরী শক্তিপীঠের ১০০টি দরজা নির্মাণ করেন। কিন্তু মন্দিরটি কবে নির্মিত হয়েছিল তা জানা যায়নি। পরবর্তীতে লক্ষ্মণসেন এবং প্রতাপাদিত্য তাদের রাজত্বকালে এটি সংস্কার করেন। কিংবদন্তি আছে যে মহারাজা প্রতাপাদিত্যের সেনাপতিরা এখানকার জঙ্গল থেকে অতিপ্রাকৃত আলোর একটি রেখা দেখতে পেয়েছিলেন এবং একটি মানুষের হাতের তালুর আকারের একটি পাথরের ব্লকের উপর পড়েছিলেন। পরে প্রতাপাদিত্য কালীর পূজা শুরু করেন এবং এই কালী মন্দিরটি নির্মাণ করেন। সেনাপতি মান সিং যশোরেশ্বরী কালী দর্শন নামকরণ করে প্রতাপাদিত্য দুর্গের নকশা নিয়ে যান। পরে মুঘলরা আক্রমণ করে দখল করে নেয়। প্রতাপাদিত্য এবং তার সেনাপতি এবং পরামশর্দাতা শঙ্কর চট্টোপাধ্যায় কালীর মূর্তি সহ মান সিংহের হাতে বন্দী হন। এটা জমিদার বাড়িতে ছিল। সে সময় জমিদার বাবু মায়ের নামে প্রায় দুইশ বিঘা জমি দান করেন। কিন্তু আজ প্রভাবশালী জমির মালিকরা ভুয়া দলিল তৈরি করে মায়ের মন্দিরের পুরো জমি দখল করে নিচ্ছে। আজ মায়ের মন্দিরের ইটের দেয়াল খসে পড়ছে।
নাটমন্দির ও স্থাপত্য:
মূল মন্দিরের পাশেই ছিল নাটমন্দির নামে একটি বড় মঞ্চমণ্ডপ যেখানে দেবীর মুখ দেখা যায়। এটি লক্ষ্মণ সেন ত্রয়োদশ শতাব্দীতে নির্মাণ করা হয়েছিল কিন্ত্তু কারা এটি নির্মাণ করেছিল তা জানা সম্ভব হয়নি। ১৯৭১ সালের পর এটি ভেঙে পড়ে। এখন শুধু স্তম্ভগুলোই দেখা যাচ্ছে।
আপনি যদি ভ্রমণ পিপাসু হয়ে থাকেন তাহলে আধুনিক স্থাপত্য, ঐতিহাসিক স্থান, নদী ও সমুদ্র সৈকত, পাহাড়ি অঞ্চল, বাগান ও বনাঞ্চল, বিনোদন কেন্দ্র ইত্যাদি ভ্রমণ স্থানগুলো নিচের লিংক হতে পাবেন।
আপনি খুলনা বিভাগ ভ্রমণ স্থানগুলো দেখতে পারেন।