ময়মনসিংহ জেলা পরিচিতি

ময়মনসিংহ জেলা নামকরণ নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে বিভিন্ন মত রয়েছে। এবং ১৬ শতকে, বাংলার স্বাধীন সুলতান সৈয়দ আলাউদ্দিন হোসেন শাহ তার পুত্র সৈয়দ নাসিরুদ্দিন নসরত শাহের জন্য এই অঞ্চলে একটি নতুন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন, তাই নাম নসরতশাহী বা নাসিরাবাদ। মুসলিম যুগের উৎস হিসেবে নাসিরাবাদ নামটি আজও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যতীত উল্লেখ নেই। ১৭৭৯ সালে প্রকাশিত রেনেলের মানচিত্রে, মোমেসিং নামটি বর্তমান ‘ময়মনসিংহ’ এলাকাকে নির্দেশ করে। এর আগে আইন-ই-আকবরীতে ‘মিহমানশাহী’ এবং ‘মনমনিসিংহ’ সরকারকে বাজুহারের পরগণা হিসেবে লেখা হয়েছে। যা বর্তমান ময়মনসিংহ হিসাবে গণ্য করা হয়। এসব বিবেচনা করলে বলা যায়, সম্রাট আকবরের রাজত্বকাল থেকেই ময়মনসিংহ নামটি জনপ্রিয় ছিল। বৃটিশ আমলে ময়মনসিংহ অঞ্চলের ধনাঢ্য জমিদাররা জেলার নাম ‘ময়মনসিংহ’ রাখার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ করলে সরকার তা মেনে নেয়। সেনাপতি মান সিংহের বার ভূঁইয়া প্রধান ঈশা খানকে পরাজিত করার জন্য সম্রাট আকবর এই অঞ্চলে প্রেরণ করেছিলেন। জেনারেল মান সিংহ ময়মনসিংহে একটি ঘাঁটি স্থাপন করেন।

মান সিংহ পরে ঈশা খানের কাছে পরাজিত হন। আরেকটি তত্ত্ব হল যে তুর্কি ইসলাম প্রচারক শাহ সুলতান কামার আল-দিন রুমি (শাহ সুলতান রুমি) তার একজন শিষ্য মোমেন শাহকে এই অঞ্চলে ইসলাম প্রচারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই নামেই মোমেনশাহী ও পরে ময়মনসিংহ নামকরণ হয়েছে বলে অনেকে মনে করেন। যুক্তিটি ১০৫৩ খ্রিস্টাব্দে শাহ সুলতান কমর উদ্দিন রুমির আগমনকে নির্দেশ করে। পরবর্তীকালে এখানে মুসলিম বিজয় ও শাসন শুরু হয়। ময়মনসিংহ নামের এই বিস্তীর্ণ শহর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যের স্বর্গ। একসময় ভারতের বৃহত্তম জেলা হিসেবে পরিচিত ময়মনসিংহ পরবর্তীতে প্রশাসনিক প্রয়োজনে বেশ ছোট হয়ে যায়। ১৯৬৯ সালে টাঙ্গাইল জেলাকে পৃথক জেলা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পরও ময়মনসিংহ ছিল পাক ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা। ময়মনসিংহের ভূসংস্থান একদিকে নেত্রকোনা-কিশোরগঞ্জের বিস্তীর্ণ জলাভূমি-হাওর অঞ্চল, মধুপুর ও ভাওয়ালের বিস্তীর্ণ বনভূমি, ময়মনসিংহ-জামালপুরের সমতলভূমি, শেরপুর-ময়মনসিংহের পাহাড়ি অঞ্চল, বিস্তীর্ণ উপত্যকা ও উর্বর মাটি। টাঙ্গাইল। ভূ-সংস্থানের বৈচিত্র্যের কারণে এ অঞ্চলের মানুষের সামাজিক জীবন, চরিত্র বৈশিষ্ট্য, জীবিকা ও সংস্কৃতি বৈচিত্র্যময়। টাঙ্গাইলের পর জামালপুর (শেরপুরসহ), কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনাকে পৃথক জেলার মর্যাদা দেওয়া হলেও বর্তমান ময়মনসিংহ জেলা আয়তনে বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার একটি। এ জেলার উর্বর মাটি ধান, পাট, সবজি ও রেপসিড উৎপাদনের জন্য খুবই উপযোগী।

 

এই বিষয়ে আরও তথ্য  জানতে  চাইলে এই লিংকে দেখতে পারেন।

আপনি যদি ভ্রমণ পিপাসু হয়ে থাকেন তাহলে আধুনিক স্থাপত্য, ঐতিহাসিক স্থান, নদী ও সমুদ্র সৈকত, পাহাড়ি অঞ্চল, বাগান ও বনাঞ্চল, বিনোদন কেন্দ্র ইত্যাদি ভ্রমণ স্থানগুলো নিচের লিংক হতে পাবেন।

আপনি রাজশাহী বিভাগ ভ্রমণ স্থানগুলো দেখতে পারেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *