রবি ঠাকুরের কুঠিবাড়ি – নওগাঁ

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি (রবি ঠাকুরের কুঠিবাড়ি) জেলা শহর থেকে প্রায় ২৬ কিলোমিটার দূরে আত্রাই উপজেলার পতিসরে নগর নদীর তীরে অবস্থিত। জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারের জমিদারির কালীগ্রাম পরগণার সদর দপ্তর ছিল কাছারি। বর্তমানে রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে কবির অনেক স্মৃতিসৌধ সংরক্ষণ করা হয়েছে। প্রতি বছর পঁচিশে বৈশাখ কবির জন্মদিনে এখানে বছরের পর বছর ধরে নানা অনুষ্ঠান ও লোকজ উৎসব হয়ে আসছে। নওগাঁ সদর থেকে বাসে পতিসর যাওয়া যায়।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত কুঠিবাড়ি (কাচারী বাড়ি), পতিসর, মনিয়ারী ইউনিয়ন, আত্রাই উপজেলা,কালিগ্রাম পরগনা, নওগাঁয় অবস্থিত। আঁকাবাঁকা পাকা রাস্তা নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার মনিয়ারী ইউনিয়নে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়ি পতিসরের শান্ত গ্রামের দিকে নিয়ে গেছে। কবির প্রিয় নাগর নদী এসে পৌঁছেছে কুটিবাড়ির সীমানায়। সেই নদীতে এখন পানি নেই। প্রতি বছর কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন উপলক্ষে এখানে মানুষের সমাগম হয় এবং বসে  রবীন্দ্র মেলা। কবির ভক্তরা দূর-দূরান্ত থেকে পতিসর কুঠিবাড়ির ভবনে ভিড় করেন, যেখানে তাদের প্রিয় কবির স্মৃতি রয়েছে।

১৮৯১ সালের পর কবি নগর নদী পথে বজড়ায় চড়ে বহুবার পতিসর কুঠিবাড়িতে আসেন। এই পতিসরে বসে কবি কাব্য নাটিকা, গোরা বিদায়, অভিশাপ ও ঝরা বাইরের উপন্যাস রচনা করেন। ছোটগল্পের মধ্যে রয়েছে প্রতিহিংস, ঠাকুরদা, ইংরেজি এবং ভারতীয় প্রবন্ধ। “তুমি সন্ধ্যার মেঘমালা/ তুমি আমার নিবৃত্তি সাধনা”, বধূ মিছে রাগ করোনা, তুমি নব রূপে এসো প্রাণের মতো অনেক গান রয়েছে। দুই বিঘা জমি, এক পায়ে তালগাছ আর বেশ কিছু কবিতা। কবির স্মৃতি বিজড়িত মণিতলার পূজা মণ্ডপের তালগাছটি আজ আর নেই। অনেক আগেই ঝড়ে উঠে গেছে। তবে রবীন্দ্র গবেষকদের মতে, পতিসর কুঠিবাড়ির জন্য দুই বিঘা মাঠ হবে কবির লেখা কবিতার দুই বিঘা জমি।কবির কবির দেয়াল ঘড়ি, লোহার সিন্দুক, নাগর বোটের এ্যাংকর, খাট, টি-পট, আয়না, টি-টেবিল,  ট্রাক্টরের ভগ্নাংশ, কবির স্নানের বাথটাব, কবির বিভিন্ন বয়সের ছবি, চায়ের কেটলি, রাইস ডিস, কবির স্বহস্তে লিখিত ৬ পৃষ্ঠার চিঠির ফটো কপি, কবির বজড়ার রেপ্লিকাসহ বিভিন্ন উপকরণ।

 

কবি তাঁর পুত্রের নামানুসারে  প্রতিষ্ঠা করেন ‘কালীগ্রাম রথীন্দ্রনাথ ইনস্টিটিউট’। ১৯১৩ সালের নোবেল পুরস্কারের অর্থের ১ লাখ ৮ হাজার টাকা তিনি কৃষকদের উন্নয়নে প্রতিষ্ঠিত কৃষি ব্যাংকে দান করেন। ১৯৩৭ সালে কবি রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর সর্বশেষ পতিসর কুঠিবাড়িতে গিয়েছিলেন। কুঠি বাড়ির সামনে সিংহ দরজা। সেই দরজার সামনে রয়েছে বিশাল উঠান। কুটিরের অভ্যন্তরটি সিংহ দরজার ঠিক বাইরে, সামনে একটি প্রশস্ত উঠান। উঠোনে কবির ভাস্কর্য। উঠানের তিন দিকে সিঁড়ি উঠে গেছে।

নওগাঁর বিশিষ্ট রবীন্দ্র গবেষক অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আতাউল হক সিদ্দিকী বলেন, পতিসর কুঠিবাড়ি যে পরগনায় অবস্থিত সেটিই কবির কাব্য সূত্রে পাওয়া জমিদারি কালীগ্রাম পরগনা।

কিভাবে যাব:

জেলা শহর থেকে প্রায় ২৬ কিলোমিটার দূরে আত্রাই উপজেলার পতিসরে নগর নদীর তীরে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি অবস্থিত।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *