বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের একটি কৃষি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এটি ময়মনসিংহ শহরে অবস্থিত। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সর্বোচ্চ কৃষি শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান। এটি কৃষি বিজ্ঞানের সকল শাখাকে কভার করে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল লক্ষ্য হল দক্ষ কৃষিবিদ, প্রাণিবিদ, প্রযুক্তিবিদ এবং তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক জ্ঞানসম্পন্ন কৃষিবিদ তৈরি করা যারা একটি মানসম্পন্ন উচ্চতর কৃষি শিক্ষা ব্যবস্থা প্রদানের মাধ্যমে দেশের কৃষি উন্নয়নের দায়িত্ব নিতে সক্ষম।
১৯৬১ সালে ভেটেরিনারি ও এগ্রিকালচারাল ফ্যাকাল্টি নামে দুটি অনুষদ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার কয়েক মাসের মধ্যেই পশুপালন অনুষদে তৃতীয় একটি অনুষদের যাত্রা শুরু হয়। ১৯৬৩-৬৪ শিক্ষাবর্ষে কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদ, ১৯৬৩-৬৫ শিক্ষাবর্ষে কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ এবং ১৯৬৩-৬৮ শিক্ষাবর্ষে ফিশারিজ অনুষদকে একাডেমিক প্রোগ্রামে যুক্ত করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রশাসন ভবন, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, আধুনিক ২০০০ আসন বিশিষ্ট অডিটোরিয়াম, সম্প্রসারণ ভবন, ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র, স্বাস্থ্য কেন্দ্র, জিমনেসিয়াম, স্টেডিয়াম, জিটিআই ভবন এবং ১৩ জন শিক্ষার্থী সহ বেশ কয়েকটি অনুষদ ভবন রয়েছে। হাউজিং হল যার মধ্যে ৪টি ছাত্রীদের। এছাড়াও রয়েছে ড. ওয়াজেদ মিয়ার ডরমিটরী।
গবেষণায় সাফল্য:
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শস্যের জাত ও উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। এগুলোর মধ্যে বাউ-৬৩, বাউকুল, বাউধান-২, বাউ-এম/৩৯৫, নামে উফশী ধান জাত- সম্পদ ও সম্বল, বাউ-এম/৩৯৬ নামে ৪টি উফসি সরিষা জাত, সোহাগ, ডেভিস, ব্র্যাগ, জি-২ ও বিএস-৪ নামে ৫টি সয়াবিন জাত, কমলা সুন্দরী ও তৃপ্তি নামে আলুর জাত, কলা, লতিরাজ, ও আনারস উৎপাদনের উন্নত প্রযুক্তি, রাইজোবিয়াম জৈব সার উৎপাদন প্রযুক্তি, বিলাসী ও দৌলতপুরী নামে তিনটি মুখীকচুর জাত, অ্যারোবিক পদ্ধতিতে ধান চাষ প্রযুক্তি, বীজের স্বাস্থ্য পরীক্ষা সহজ পদ্ধতি, পেয়ারা গাছের মড়ক নিবারণ পদ্ধতি, সয়েল টেস্টিং কিট, শুকানো পদ্ধতিতে বোরো ধান চাষ, পশু খাদ্য হিসেবে ভুট্টা উৎপাদন বৃদ্ধির কলাকৌশল। আইপিএম ল্যাব বায়োপেস্টিসাইড, আফ্রিকান ধৈঞ্চার অঙ্গজ প্রজনন, এলামনডা ট্যাবলেট, বিলুপ্তপ্রায় শাকসবজি ও ফলের জার্মপ্লাজম সংরক্ষণ ও মলিকুলার বৈশিষ্ট সনাক্তকরণ কলাকৌশল, হাঁসের প্লেগ ভ্যাকসিন ও হাঁস-মুরগির ফাউল কলেরার ভ্যাকসিন তৈরি,মোরগ-মুরগির রাণীক্ষেত রোগ ও ফাউলপক্সের প্রতিষেধক টিকা উৎপাদন, রাণীক্ষেত রোগ সহজেই সনাক্তকরণে মলিকুলার পদ্ধতির উদ্ভাবন, মুরগির স্যালমোনোসিস রোগ নির্ণয় প্রযুক্তি; কমিউনিটি ভিত্তিক উৎপাদনমুখী ভেটেরিনারি সেবা, হাওর এলাকায় হাঁস পালনের কলাকৌশল, গবাদিপশুর ভ্রুণ প্রতিস্থাপন, ছাগল ও মহিষের কৃত্রিম প্রজনন, গাভীর উলানফোলা রোগ প্রতিরোধ কৌশল, কৃত্রিম প্রজননে ব্যবহৃত ষাঁড়ের আগাম ফার্টিলিটি নির্ণয়, গো-খাদ্য হিসেবে খড়ের সঙ্গে ইউরিয়া-মোলাসেস ব্লক ব্যবহার, হরমোন পরীক্ষার মাধ্যমে গরু ও মহিষের গর্ভ নির্ণয়, সুষম পোল্ট্রি খাদ্য, হাঁস-মুরগির উন্নত জাত উৎপাদন, কৃষি অর্থনীতি বিষয়ে মাঠপর্যায়ে বিভিন্ন অনুসন্ধানী গবেষণা তৎপরতার মাধ্যমে টেকসই শস্যবীমা কার্যক্রম, ক্ষুদ্র সেচ কার্যক্রমের উন্নয়ন, স্বল্প ব্যয়ে সেচনালা তৈরি, পশুসম্পদ উপখাত ও ডেয়রি উৎপাদনের উন্নয়ন, উন্নত ধরনের লাঙ্গল ও স্প্রে মেশিন, বাকৃবি জিয়া সার-বীজ ছিটানো যন্ত্র, সোলার ড্রায়ার, মাগুর ও শিং মাছের কৃত্রিম প্রজননের কলাকৌশল, উন্নত ধরনের হস্তচালিত টিউবয়েল পাম্প, জ্বালানি সাশ্রয়ী উন্নতমানের দেশি চুলা, ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ পদ্ধতি, খাচায় পাঙ্গাস চাষ, মাছের জীবন্ত খাদ্য হিসেবে টিউবিফিসিড উৎপাদনের কলাকৌশল, পেরিফাইটন বেজড মৎস্যচাষ, দেশি পাঙ্গাসের কৃত্রিম প্রজনন, ডাকউইড দিয়ে মিশ্র মৎস্যচাষ, পুকুরে মাগুর চাষের উপযোগী সহজলভ্য মৎস্যখাদ্য তৈরি, শুক্রাণু ক্রয়োপ্রিজারভেশন প্রযুক্তি, মাছের পোনা পালনের জন্য রটিফারের চাষ, স্বল্প ব্যয়-মিডিয়ামে ক্লোরেলার চাষ, মাছের রোগ প্রতিরোধকল্পে ঔষধি গাছের ব্যবহার এবং মলিকুলার পদ্ধতি ব্যবহার করে মাছের বংশ পরিক্রম নির্ণয়, তারাবাইম, গুচিবাইম ও বাটা মাছের কৃত্রিম প্রজনন, ধানক্ষেতে মাছ ও চিংড়ি চাষ, সহজলভ্য মাছের খাদ্য তৈরি, পুকুরে মাছ চাষ, একোয়াপনিক্সের মাধ্যমে মাছ এবং সবজি উৎপাদন, মাছের বিকল্প খাদ্যের জন্য ব্লাক সোলজার ফ্লাই চাষ এবং কচি গমের পাউডার উৎপাদন।
কিভাবে যাবেন:
এটি ময়মনসিংহ শহরে অবস্থিত।
এই বিষয়ে আরও তথ্য জানতে চাইলে এই লিংকে দেখতে পারেন।
আপনি যদি ভ্রমণ পিপাসু হয়ে থাকেন তাহলে আধুনিক স্থাপত্য, ঐতিহাসিক স্থান, নদী ও সমুদ্র সৈকত, পাহাড়ি অঞ্চল, বাগান ও বনাঞ্চল, বিনোদন কেন্দ্র ইত্যাদি ভ্রমণ স্থানগুলো নিচের লিংক হতে পাবেন।
আপনি রংপুর বিভাগ ভ্রমণ স্থানগুলো দেখতে পারেন।