ধর্মসাগর দীঘি ইতিহাস
১৪৫৮ সালে ধর্মসাগর দীঘি ত্রিপুরার শাসক মহারাজা প্রথম ধর্মমাণিক্য দ্বারা খনন করা হয়েছিল।
রাজার মূল লক্ষ্য ছিল এ অঞ্চলের মানুষের পানি সমস্যা দূর করা। রাজমালা বই অনুসারে, রাজা দীর্ঘ ৩২ বছর (১৪৩১-১৪৩১খ্রিস্টাব্দ) রাজত্ব করেছিলেন।
মহারাজা ধর্মমাণিক্যের নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়েছে ধর্মসাগর। ধর্মসাগরকে নিয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অনেক কিংবদন্তি ও উপকথা।
শেষ বিকেলে সূর্যের আলো ম্লান হতে শুরু করলে ধর্মসাগরের উপকূল ধীরে ধীরে ফুটে উঠতে থাকে শত শত পুণ্যার্থীর পদচারণায়।
ধর্মসাগর দীঘি আয়তন
বর্তমানে ধর্মসাগর ২৩:১৮ একর এলাকা জুড়ে রয়েছে। এর পূর্বে কুমিল্লা স্টেডিয়াম ও কুমিল্লা জেলা স্কুল, উত্তরে সিটি কর্পোরেশন বাগান এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয় রয়েছে।
ঢাকা থেকে ধর্মসাগর দীঘি দূরত্ব
ঢাকা থেকে কুমিল্লা পর্যন্ত সড়ক পথের দূরত্ব মাত্র ২ ঘন্টা ৩০ মিনিট। ঢাকা থেকে কুমিল্লা ৯৬ কিলোমিটারের পথ।
ধর্মসাগর দীঘি কে প্রতিষ্ঠা করেন
১৪৫৮ সালে ত্রিপুরার অধিপতি মহারাজা প্রথম ধর্মমাণিক্য ধর্মসাগর ধর্মসাগর দীঘি খনন করেন। এই অঞ্চলের মানুষের জলের কষ্ট নিবারণ করাই ছিল রাজার মূল উদ্দেশ্য।
ধর্মসাগর দীঘি দেখার মতো কি আছে
এই লেকটিকে কুমিল্লার নগরবাসী একটি বিনোদন কেন্দ্র বলে মনে করে। ছুটির দিনটি উদযাপন করতে প্রতিদিন এখানে বিপুল সংখ্যক লোকের সমাগম ঘটে। এছাড়া ধর্মসাগর সারাদেশে বিখ্যাত।
ধর্মসাগরের উত্তর কোণে রাণীর বাড়ি, পৌরাপার্ক। পূর্ব পাশে কুমিল্লা স্টেডিয়াম এবং পশ্চিম পাশে আসন রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি পর্যটকরাও আসেন। দীঘিপাড়ের সবুজ বড় গাছের সারি ধর্মসাগরকে অন্য মাত্রা দিয়েছে। এছাড়া শীতকালে ধর্মসাগরে অনেক অতিথি পাখির আগমন ঘটে।
এটা প্রতিদিন দেখা করার মত। ধর্মসাগরের উত্তর কোণে শিশুপার্ক কুমিল্লা। আপনি এই শিশু পার্কে বসে সমুদ্রের দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন।
এই শিশু পার্কে রয়েছে সবুজ ঘাস এবং বিশাল গাছ। এই শিশু পার্কে বসে মনটা আনন্দে ভরে যায়।
দীঘিপাড়ের সবুজ বনানী ধর্মসাগরকে দিয়েছে অন্য মাত্রা। সারি সারি সাজানো বড় বড় গাছ। তাদের মধ্যে একটি কংক্রিট বেঞ্চ আছে। এক কথায় দারুণ।
যারা বিকেলে বেড়াতে যেতে চান তাদের জন্য এটি একটি আদর্শ জায়গা। আপনি চাইলে নৌকা ভাড়া করে লেকে ঘুরতে পারেন। সব মিলিয়ে এটি একটি বিস্ময়কর এবং দর্শনীয় স্থান।
ধর্মসাগর দীঘি কোথায় অবস্থিত
কুমিল্লা শহরের প্রাণকেন্দ্রে ধর্মসাগর দীঘি অবস্থিত এক বৃহত্তম লেক।
গুগল ম্যাপে ধর্মসাগর দীঘি
গুগল ম্যাপে ধর্মসাগর দীঘি দেখতে এই লিংকে কিক্লি করুন।
ধর্মসাগর দীঘি কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে অনেক বাস রয়েছে যা কুমিল্লা যায়। যেমন কোস্টাল (01981002932, 01981002942), সয়দাবাদ থেকে তিশা (01731217322), কমলাপুর থেকে বিআরটিসি (01770493775) অথবা এশিয়া লাইন পরিবহন থেকে কুমিল্লার শিরাংগাছা। তারপর অটোরিকশায় ভাদুরতলা/ধর্মসাগর।
কোথায় থাকবেন
কুমিল্লা ক্লাব, কুমিল্লা সিটি ক্লাবসহ বেশ কিছু হোটেল ও রেস্ট হাউস রয়েছে। এসি বা নন-এসি সিস্টেম পাওয়া যায়। এক রুমে দুইজন থাকার জন্য।
এছাড়া হোটেল হোটেল সোনালী, চনিদ্রা বাগ, ন্দ্রিমা, হোটেল, শালবন, হোটেল, আশিক রেস্ট হাউস ইত্যাদি রয়েছে।
আশিক আবাসিক রেস্ট হাউস – ঠিকানা: ১৮৬, নজরুল এভিনিউ কুমিল্লা, যোগাযোগ:৬৮৭৮১
সোনালী হোটেল – ঠিকানা: কান্দিরপাড় চত্বর, কুমিল্লা, যোগাযোগ: ৬৩১৮৮
আবেদিন হোটেল – ঠিকানা: স্টেশন রোড কুমিল্লা, যোগাযোগ:৭৬০১৪
নুরজাহান হোটেল – ঠিকানা: ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ে, কুমিল্লা, যোগাযোগ: ৬৮৭৩৭
ধর্মসাগর দীঘি খাওয়ার ব্যবস্থা
কুমিল্লায় খাওয়ার জন্য ছোট-বড় অনেক খাবারের হোটেল আছে। আপনি আপনার পছন্দের খাবার যেকোনো জায়গায় খেতে পারেন।
এর মধ্যে কুমিল্লা জেলা স্কুলের জন্য রয়েছে বাংলা রেস্টোরা, পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডে চান্দুমিয়ার হোটেল, নূরজাহান হোটেল, ময়নামতি হোটেল, কান্দিরপাড়ায় দিনা হোটেল, বাদশা মিয়া বাজারে মেলোডি, বিশ্ব রোডের ময়নামতি হোটেল। মনোহরপুরে ইয়াম ইয়াম। ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
কুমিল্লায় যতই খাবার খান না কেন, কুমিল্লার বিখ্যাত মাতৃভান্ডারে রসমালাই খেতে বা বাড়িতে নিয়ে যেতে ভুলবেন না।
কুমিল্লায় আপনি সব জায়গায় মাতৃভান্ডারের দোকান পাবেন। কিন্তু প্রকৃত মাতৃধনের সন্ধান মিলবে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ১১নং ওয়ার্ডের মনোহরপুর কালীবাড়িতে।
দাম প্রতি কেজি ২৬০ টাকা। দোকানে এত লোক যে সেখানে বসে রসমালা খেতে পারবেন না। কিনুন এবং যান।
উপসংহার
যাইহোক, শালবন বৌদ্ধ বিহারের কাছেই রয়েছে বার্ড। আপনি যদি বার্ডের সাথে যোগাযোগ করেন তবে আপনি সেখানে রাতারাতি থাকতে পারেন।
কুমিল্লার দর্শনীয় স্থান
কুমিল্লার দর্শনীয় স্থান এর উল্লেখ্যযোগ্যগুলো নিচে দেওয়া হলো।
- ধর্মসাগর দীঘি
- নব শালবন বিহার
- ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি
- ফান টাউন পার্ক
- ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্ক
- ময়নামতি জাদুঘর
- শালবন বৌদ্ধ বিহার
- রাণী ময়নামতির প্রাসাদ
- রূপবান মুড়া
- অভয় আশ্রম
- অর্জুনতলা মসজিদ
- আনন্দবিহার
- উত্তর তেতাভূমি জমিদার বাড়ি
- ইটাখোলা মুড়া
- উজিরপুর টিলা
- কর্নেলের মুড়া
- কুমিল্লা জগন্নাথ মন্দির
- কুটিলা মুড়া
- কুমিল্লা চিড়িয়াখানা ও বোটানিক্যাল গার্ডেন
- কুমিল্লা বিমানবন্দর
- কুমিল্লা সেনানিবাস
- কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
- কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ
- কুমিল্লা রেলস্টেশন
- কোটবাড়ি
- কোটবাড়ি মুড়া
- কোবা জামে মসজিদ চর বাকর
- গুণবতী রেলস্টেশন
- বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমী