ডিঙ্গাপোতা হাওর – নেত্রকোনা

ডিঙ্গাপোতা হাওর  বাংলাদেশ প্রকৃতির অপরূপ কন্যা। নিকেতন বাংলাদেশের অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রয়েছে। প্রকৃতি যেন নির্মম হাতে সাজিয়েছে সুন্দর বাংলাকে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মেলা বাংলাদেশ। এই জমি বিপুল সম্ভাবনার উর্বর মাঠ। এদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য অনেক পুরনো। এদেশের শিল্প সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্য বরাবরই দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। যে কোনো দেশের জন্য পর্যটন শিল্প একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত। বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশের জন্য রয়েছে সমুদ্র সৈকত, ম্যানগ্রোভ বন, প্রবাল দ্বীপ, পর্বতমালা, জলপ্রপাত, সুন্দরবন, চা বাগান,  পুরাকীর্তি এবং আরও অনেক দর্শনীয় স্থান। যা অনায়াসে প্রতিটি বিচরণ কামনার কাছে আবেদন করে।

বাংলাদেশের কক্সবাজার এবং কুয়াকাটার সমুদ্র সৈকত, যেখানে আপনি সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। সেন্ট মার্টিনের নারকেল ঘেরা সমুদ্র সৈকতে পর্যটন শিল্পকে চাঙ্গা করার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। রাঙামাটির সবুজ রঙের আদিম সৌন্দর্য বিস্ময়কর। এখানকার বর্ণিল সংস্কৃতি ও জীবনধারা পর্যটকদের মুগ্ধ করে। সুন্দরবনের অগণিত পাখির ধ্বনি একজন পর্যটককে এক স্বপ্নময় আবেশে মুগ্ধ করে। তেমনি বাংলাদেশের ভাটির দেশ হাওর অঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে রয়েছে। এই আশ্রয়স্থলগুলির মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যে কোনও ভ্রমণ উত্সাহীকে ইশারা দেয়। এই বর্ষার জলে ভাসা হাওরে নিজেকে ভেসে বেড়াতে মন ছুটে হাওর পানে। প্রকৃতি পরিবেশ ও হাওরবাসীর জীবনযাপন দেখতে হাওরে যেতে হবে।

বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ৭টি জেলার মধ্যে ২৫ হাজার বর্গকিলোমিটার আয়তনের হাওড় অঞ্চলের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিটি হাওর যেন শস্য ও মাছের বিশাল ভান্ডার। হাওর কখনো সবুজ কখনো সাগর। শুষ্ক মৌসুমে যেখানে সবুজের ঢেউ খেলা করে, বর্ষায় সেখানে পানি থাকে। প্রতিটি ঘন্টা যেমন সুন্দর তেমনি শ্বাসরুদ্ধকর। হাকালুকি, বাইক্কা বিল, টাঙ্গুয়ার হাওর, হাইল হাওর, কাউয়াদিঘি, কড়াইয়া, শনির হাওর, টগর হাওর, কেউলা, ডিঙ্গাপোতা প্রতিটি হাওর পর্যটন শিল্পের বিপুল সম্ভাবনার দরজার মতো। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ সৌন্দর্যে পান করতে, হিজল করচের জলভরা পুকুরের সারি দেখতে, শরতের রাতে শরতের শশীর আলো দেখতে, হিজলের ছায়ায় জলভরা পুকুরের সারি দেখতে। শীতল বাতাসে বিশ্রাম নিতে মন ছুটে যায়। যেকোনো পর্যটনের জন্য উপযুক্ত জায়গা হতে পারে। এর মধ্যে একটি হাওর হল ডিঙ্গাপোতা।

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জকে বলা হয় ভাটি বাংলার প্রবেশদ্বার। মোহনগঞ্জের পূর্বাঞ্চল ঘিরে রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও নান্দনিক সৌন্দর্যের আধার ডিঙ্গাপোতা হাওর । বর্ষার জল আর হেমন্তের সোনালি ধান, জীববৈচিত্র্য আর শ্বাসরুদ্ধকর সৌন্দর্য যে কোনো পর্যটকের মনকে বিচরণ করবে। এ হাওরকে ঘিরে গড়ে উঠতে পারে সম্ভাবনাময় পর্যটন এলাকা। আর এ জন্য হাওরে প্রবেশ ও হাওর থেকে ফেরার জন্য দুটি মুখ বেছে নেওয়া যেতে পারে তেতুলিয়া, খুরশিমুল ও সিয়াধর গ্রাম।

এসব স্থানকে ঘিরে পর্যটন স্পট গড়ে তোলা যেতে পারে। সম্ভাবনাময় পর্যটন শিল্পের দুয়ার খুলে দিতে পারে এই পৌরসভা। এ শিল্পকে আরও বিকশিত করতে যথাযথ পদক্ষেপ প্রয়োজন। মাদার বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে অভিভূত হয়ে চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাং সপ্তম শতাব্দীতে বাংলাদেশ সফরে এসে বলেছিলেন, ‘একটি ঘুমের সৌন্দর্য যা কুয়াশা এবং জল থেকে উঠে আসে।’ সমন্বিত প্রচেষ্টা এবং যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশ অব্যাহত রাখুন। বাংলার জল হোক বাংলার প্রাণরেখা, গড়ে উঠুক নতুন পর্যটন কেন্দ্র।

কিভাবে যাবেন:

নেত্রকোনা জেলায় পৌঁছে মোহনগঞ্জ শহর থেকে রিকশাযোগে ডিঙ্গাপোতা হাওরে প্রবেশের জন্য ডিকলাকোনা যাওয়া যায়। এখান থেকে মোটরবোটে করে হাওরের বিভিন্ন গ্রামে যাওয়া যায়।

এই বিষয়ে আরও তথ্য  জানতে  চাইলে এই লিংকে দেখতে পারেন।

আপনি যদি ভ্রমণ পিপাসু হয়ে থাকেন তাহলে আধুনিক স্থাপত্য, ঐতিহাসিক স্থান, নদী ও সমুদ্র সৈকত, পাহাড়ি অঞ্চল, বাগান ও বনাঞ্চল, বিনোদন কেন্দ্র ইত্যাদি ভ্রমণ স্থানগুলো নিচের লিংক হতে পাবেন।

আপনি রাজশাহীর পুঠিয়া রাজবাড়ি ভ্রমল স্থানটি দেখতে পারেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *