ঝিনাইদহ জেলা পরিচিতি

ঝিনাইদহ নামের উৎপত্তি সম্পর্কে কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ নেই। ঝিনুক থেকে ঝিনাইদহ নামটি এসেছে বলে ধারণা করা হয়। সড়ক ও জনপথ বিভাগের বাংলোর সামনের বড় দোহাটিতে তখনও প্রচুর ঝিনুক ছিল। কিংবদন্তি অনুসারে, বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ এখানে একত্রে ঝিনুক তুলতে আসত। আবার যেহেতু ঝিনুক থেকে চুন ও বোতাম তৈরি হয় সেহেতু চুন ব্যবসায়ীরা ঝিনুক সংগ্রহের জন্য এখানে একদল লোক রেখেছিলেন। ঝিনুক পাওয়া স্থানটিকে তারা ঝিনুকদাহ বলে। কেউ কেউ বলেন, “ঝিনুক” এবং “দাহ” মিলিত হয়ে ঝিনকুদহ তৈরি করে। অন্য কথায়, দহে (জলের বড় অংশ) ঝিনুক ছিল, এই দহ থেকে ঝিনুক সংগ্রহ করা হয়েছিল এবং স্থানীয় ভাষায় ঝিনাইদহ বর্তমান ঝিনাইদহে রূপান্তরিত হয়েছিল। আবার কেউ বলেন, ‘দহ’ মানে গ্রাম। ঝিনুকের সহজলভ্যতার কারণে এই গ্রামটিকে অবশ্যই ঝিনুকদহ বলা হত যা পরবর্তীতে ঝিনাইদহে পরিণত হয়।

নামের সাথে সম্পর্কিত আরেকটি কিংবদন্তি হল যে এক ইংরেজ ভদ্রলোক নৌকায় করে নবগঙ্গা নদী পার হয়েছিলেন। তখন মানুষ ঝিনুক সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করত। ইংরেজ ভদ্রলোক ঝিনুক সংগ্রহকারীদের কাছে এই জায়গার নাম জিজ্ঞেস করলেন। কিন্তু ঝিনুক সংগ্রাহকরা সাহেবের কথা বুঝতে পারলেন না। তারা মনে করে সে জানতে চায় তারা নদী থেকে কী পায়। তাই সাহেবের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে জায়গার নাম জানালেন ঝিনুক। এতে ইংরেজ সাহেব ধরে নেন এই স্থানের নাম ‘ঝেনি’। এই ঝেনি শব্দটি পরবর্তীতে ‘ঝিনাইদা’ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ‘ঝিনুকদহ’ এবং ‘ঝিনাইদা’-এর উৎপত্তি যাই হোক না কেন, ঝিনুকের ঝিনাইদহ নামের উৎপত্তির পক্ষেই বেশি সমর্থন পাওয়া যায়। এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের বাংলোর সামনে যে ব্যাপক দহ  ছিলো তা অস্বীকার করার উপায় নেই।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *